স্বপ্নদোষ কি

স্বপ্নদোষ কেন হয়

স্বপ্নদোষ আসলেই কোন দোষ নয়। এটি প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার প্রথম সিমটম। মেয়েদের যেমন প্রাপ্ত বয়স্ক হলে মাসিক বা পিরিয়ড হয়, ঠিক তেমনি ছেলেরাও প্রাপ্ত বয়স্ক হলে স্বপ্নদোষ বা নাইট প্রেসার হয়ে থাকে। সাধারণত ছেলেদের ১৩ বছর বয়সের পর থেকে স্বপ্নদোষ বা নাইট প্রেসার হয়ে থাকে। তবে অনেকের ১৩ বছর বয়সের আগেও হতে পারে বা পরেও হতে পারে। ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলেদের মধ্যে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রথম বছরগুলিতে স্বপ্নদোষ খুব সাধারণ একটি ব্যাপার। তবে বয়ঃসন্ধির পর যেকোনো সময় স্বপ্নদোষ হতে পারে। এটি যৌন উত্তেজক স্বপ্নের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে বা নাও হতে পারে। তবে অনেকেই ঘুমের মধ্যে যৌন উত্তেজক স্বপ্ন দেখে থাকে এবং তাদের বীর্যপাত হয়ে থাকে। এই জন্যই একে সাধারণত স্বপ্নদোষ বলা হয়। কিন্তু অনেকের বেলাই যৌন উত্তেজক স্বপ্ন দেখা ছাড়াই ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত হয়ে থাকে। জেগে ওঠার সময় বা স্বাভাবিক ঘুমের সময় যে স্বপ্নদোষ হয়, তাকে বলা হয় ‘সেক্স ড্রিম’। মহিলাদের স্বপ্নদোষ হলে, তাদের কোন বীর্যপাত হয় না। বরং তারা শরীরে একধনের চরম পুলক অনুভব করে থাকে।

 

মাসে কতবার স্বপ্নদোষ হওয়া স্বাভাবিক?

সবার স্বপ্নদোষের মাত্রা একরকম হয় না। ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। মাসে চার থেকে পাঁচবার স্বপ্নদোষ হওয়া সাভাবিব ব্যাপার। অনেকের এর থেকে কম বা বেশি হতে পারে। এক্ষেত্রে নারীদের স্বপ্নদোষের পরিমান একদমি কম, বছরে দুই একবার বা সারা জীবনে আট দশবার। এটা নির্ভর করে তার শরীরের হরমোনের মাত্রার উপর। যাদের শরীরে হরমোনের পরিমান বেশি, তাদের স্বপ্নদোষ হওয়ার পরিমান বেশি। অবিবাহিত ছেলেদের স্বপ্নদোষ বেশি হয়ে থাকে। তবে যেসব বিবাহিত পুরুষরা দীর্ঘদিন যাবৎ স্ত্রী থেকে দূরে রয়েছেন, তাদেরও বেশি স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে। যারা হস্তমৈথুন করে থাকেন, তাদের স্বপ্নদোষ কম হয়ে থাকে। কারণ তাদের স্বপ্নদোষ হওয়াার আগেই তারা বীর্যপাত করে ফেলেন। কিন্তু যারা হস্তমৈথুন বেশি করে থাকে, তাদের পুরুষাঙ্গের রগ ঢিলে হয়ে যায়। হস্তমৈথুনের মাধ্যমে বীর্যপাত হোক বা স্বপ্নদোষের মাধ্যমে বীর্যপাত হোক, আপনাকে ফরজ গোসল আদায় করতে হবে। গোসল ছাড়া আপনি নামাজ পড়তে পারবেন না। তবে বীর্যপাত না হলে গোসল ফরজ হবে না।

যারা টেসটোসটেরনযুক্ত ওষুধ সেবন করে, তাদের স্বপ্নদোষের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, কিছু ছেলেদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যাওয়াতে, তাদের স্বপ্নদোষের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। বয়ঃসন্ধির সময়, ১৩ শতাংশ পুরুষ তাদের প্রথম বীর্যপাত ঘটে স্বপ্নদোষের মাধ্যমে। তবে হস্তমৈথুনের মাধ্যমে অনেকেই তাদের প্রথম বীর্যপাত ঘটিয়ে থাকে। সাধারণত বীর্যপাতের পর লিঙ্গ শিথিল হয়ে যায়। তবে স্বপ্নদোষের বেলায় বীর্যপাতের পরও পুরুষাঙ্গ সাধারণত শিথিল হয় না। 

আমাদের সমাজে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে যে, স্বপ্নদোষ (Nightfall) হলে শরীর ভেঙ্গে যায় এবং অসুস্থ হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে এই ধরনের কথা সঠিক নয়। বিশেষত পুরুষদের স্বপ্নদোষের প্রধান কারন হল হরমোন। হরমোনের তারতম্যের কারনে স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে।

স্বপ্নদোষ বন্ধ করার উপায়

ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। আর ঘুমানোর আগে প্রস্রাব করুন এবং অন্ডকোষ ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধৌত করেনিন। এতেকরে অতিরিক্ত দুঃস্বপ্নের পরিমাণ কমে যাবে এবং ঘুমানোর আগে কখনই যৌনতা বা যৌন বিষয় নিয়ে ভাববেন না। সেক্স বই বা পর্নোগ্রাফি দেখা থেকে বিরত থাকুন।

মেয়েদের স্বপ্নদোষ

স্বপ্নদোষ ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই ঘটতে পারে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ৮৫ শতাংশ মহিলা ২১ বছর বয়সের মধ্যে কোননা কোন সময় তাদের স্বপ্নদোষ হয়েছে। কিছু নারী ১৩ বছর বয়সে এই অভিজ্ঞতা  লাভ করেছে। অনেক নারী ঘুমের মধ্যে চরম যৌন উত্তেজনা অনুভব করে এবং তারা রচিমোচনের অভিজ্ঞতা লাভ করে। অনেক নারী বুঝতেই পারেনা যে, তার স্বপ্নদোষ হয়েছে। কারণ তাদের পুরুষদের নেয় যোনি দিয়ে বীর্যপাত হয় না। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে তাদের স্বপ্নদোষ নির্ণয় করা সহজ কারণ সেখানে বীর্যপাত হয়। স্বপ্নদোষ হলে মেয়েদের বীর্য পাতলা ও হলুদ হয়। 

আরও পড়ুন: স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ এবং যেভাবে নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করবেন

রেফারেন্স: bd24live