![সুস্থ থাকার উপায়](https://www.acyclovir1.com/wp-content/uploads/2021/09/health.webp)
সুস্থ থাকার জন্য আপনার একটি সুস্থ জীবনধারা প্রয়োজন। একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা হলো এমন একটি জীবনযাত্রা যা আপনাকে আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে সুন্দর জীবন গড়তে সাহায্য করে। কিন্তু মনে রাখবেন যে একটি সুস্থ জীবনধারা শুধুমাত্র ভাল খাওয়া এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার একমাত্র কারণ নয়। এখানে শারীরিক সুস্থতার মতো মানসিক সুস্থতাও গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্য টিপস
সারা জীবন সুস্থ থাকার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ জীবন গড়ার জন্য যেমন কিছু খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করতে হয়, তেমনি কিছু ভালো অভ্যাসও করতে হয়।জীবন জুড়ে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে কিছু টিপস দেয়া হলো।
পরিষ্কার পরিছন্নতা
স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য পরিষ্কার থাকা অপরিহার্য। খাবার খাওয়ার আগে এবং পরে হাত ও মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি আমাদের শরীরকে বাহ্যিক জীবাণু থেকে রক্ষা করবে। আপনার প্রতিদিন স্নান করা উচিত। সবজি, ফল ইত্যাদি ভালোভাবে ধোয়ার পর ব্যবহার করা উচিত। ঘর, টয়লেট, বাথরুম পরিষ্কার এবং পরিপাটি রাখতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার
সুস্বাস্থ্যের জন্য ৪০ টিরও বেশি পুষ্টির প্রয়োজন। কিন্তু সব খাবার একই সময়ে পাওয়া যায় না। তাই সব ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। এমন কিছু পুষ্টি আছে যা কেবল সবজিতেই পাওয়া যায়। আবার, কিছু পুষ্টি শুধুমাত্র নিরামিষ খাবার থেকে পাওয়া যায়। তাই সব ধরনের খাবারের সঙ্গে মিশে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রচুর শাকসবজি এবং ফল খান। এগুলি আমাদের শরীরে ভিটামিন এবং খনিজ ফাইবার সরবরাহ করবে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার একটি সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য। প্রোটিন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ সচল রাখতে, মাংসপেশিকে সতেজ রাখতে এবং বিভিন্ন ধরনের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উপরন্তু, শারীরিক বিকাশের জন্য প্রোটিন অপরিহার্য। স্বাভাবিক অবস্থায় একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতিদিন ৫৬ গ্রাম প্রোটিন এবং একজন মহিলার ৪৬ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন।
অতিরিক্ত মিষ্টি ফল এড়িয়ে চলুন। তবে শরীরের জন্য ক্ষতিকর খাবার একেবারেই খাওয়া উচিত নয়।বিভিন্ন ধরনের জাঙ্ক ফুড, সোডা বা কোমল পানীয় আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
শারীরিক কার্যকলাপ
সুস্থ থাকার জন্য, আপনাকে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে।সকাল এবং সন্ধ্যায় একটু হাঁটাচলা করলে ভালো হবে। প্রতিদিন কিছুনা কিছু ব্যায়াম করা ভাল। বসে না থেকে সক্রিয় থাকুন। কোনো যানবাহন ব্যবহার না করে অল্প দূরত্বে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অন্তত এমন কিছু কাজ করুন যা শারীরিক পরিশ্রম হয়।
প্রচুর পরিমাণে জলপান
প্রচুর পানি পান সুস্থ শরীর গঠনে সাহায্য করে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতিদিন ৩.৭ লিটার এবং একজন মহিলার জন্য ২.৭ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। এই পানির ২০% খাবার এবং অন্যান্য পানীয় থেকে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, বাকি অংশ পানীয় জল দ্বারা পূরণ করা হয়। অতএব, একজনকে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম
একটি সুস্থ জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুমের অভাবে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, ওজন বৃদ্ধি এবং আরও অনেক কিছু হতে পারে। এছাড়া পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় মানসিক সমস্যা হতে পারে। অতএব, একজন প্রাপ্তবয়স্ককে অবশ্যই ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
সঠিক উপায়ে দাঁত পরিষ্কার করা
একটি সুন্দর ও সুস্থ জীবনের জন্য সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার করা অপরিহার্য। যদি দাঁত সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা হয় তবে এটি দাঁত এবং মাড়ির বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুবার ব্রাশ করা উচিত। প্রতি তিন থেকে চার মাসে ব্রাশ পরিবর্তন করা প্রয়োজন। দাঁতের প্রতিটি অংশ কমপক্ষে দুই মিনিটের জন্য ধীর বৃত্তাকার গতিতে ব্রাশ করা উচিত।
আরও পড়ুন- সর্দি কেন হয় এবং হলে কী করবেন? সর্দি-কাশি সারানোর ঘরোয়া উপায়
সামাজিক সম্পর্ক
মানুষ সামাজিক প্রাণী। তাই সুস্থ জীবনের জন্য সামাজিক সম্পর্কও একটি বড় ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাদের বন্ধু বা পরিবারের সাথে ভাল সম্পর্ক আছে তাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। মানসিক সুস্থতার জন্য একটি ভাল সম্পর্ক একজন ব্যক্তির শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।
মানসিক চাপ মুক্ত থাকুন
সুস্থ থাকার জন্য মানসিকভাবে সুস্থ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ থাকার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো মানসিক চাপ। তাই আপনাকে চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। এই চাপ অনেক কারণে হতে পারে, যেমন আর্থিক সমস্যা, চাকরির অভাব, সম্পর্কের অবসান ইত্যাদি।
মানসিক চাপ কমানোর অনেক উপায় আছে। প্রথমত, জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক করার প্রয়োজন আছে। মন ভাল রাখার জন্য তার আত্মীয়দের সাথে সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করা উচিত এবং সেগুলি সমাধান করার চেষ্টা করা উচিত। আপনি যা করতে পছন্দ করেন সেগুলি করুন। আপনি যদি রান্না করতে ভালোবাসেন, তাহলে রান্না করুন।
আপনি যদি বই পড়তে পছন্দ করেন, বই পড়ুন। এটি মনকে সতেজ করে এবং মনকে আনন্দিত করে।
আরও পড়ুন- মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে কিছু ঘরোয়া কার্যকরী উপায়!
রেফারেন্স: কালের কণ্ঠ